সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

সম্বিৎ

জীবনের গভীর খননে যারা ব্যস্ত:
তোমরা যারা আপেলের মতো নিষ্ঠাবান তাদের মঙ্গলের কথা ভেবে পাইকারি হারে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে কারওয়ান বাজারে
আমি ভোর বেলা হেঁটে চলে যাই, গাবতলি থেকে রায়ের বাজারের দিকে, হাঁটতে হাঁটতে
ফিরে আসি নিজের শরীরের ভেতরে, এখানে প্রচুর উকুন রক্তপোহাচ্ছে
তুরাগের জলের ভেতর নাৎসি দেবতারা ভায়োলিন বাজিয়ে বাজিয়ে পাহারা দিচ্ছে কাঁটাতারের বেড়া
আমি স্টক-মার্কেটে গিয়ে বনে গেছি জনতা ব্যাংক লিঃ এর মালিক, দুঃখজনক ভাবে কোন একাউন্ট-হোল্ডার এ কথা জানে না
আমিও জানি না আমি ঠিক জন্মাতে চেয়েছিলাম কিনা- এই পৃথিবীর আলো ও রোদের ভেতর ভুল ভালোবাসা
বয়ে বেড়ানোর দায় নিয়ে হৃদয় গচ্ছিত রেখেছি বৃদ্ধাঙ্গুলিতে; তাই যুগপৎ প্রেমিক ও পাষণ্ড রূপে বেঁচে আছি মথ হয়ে মিথের মতো
যারা ভালোবাসা পেতে আসেন তাদের দিকে ছুড়ে দিতে চাই নিষ্কাম শরীরের অবশেষ,
জন্মানোর দায় কার? জরায়ু অথবা পুরুষের; অথচ আমাকেই পার হতে হচ্ছে জীবনের সব ক'টি চৌকাঠ, সবক'টি রাত

আমার দিকে তুমি ছুড়ে দিও না রঙিন মদ, অথবা অতসী হাত। আমি আগে বুঝে নিই মেটাফিজিক্স
পেনশন তোলার নিয়ম এবং মাছ বাজারের মুলোমুলি
আমি আগে শিখে নিই গামছার গিট
আমি আগে বুঝে নিই অ আ ক খ
আমি আগে বুঝে নিই পিতা ও পুত্রের সম্পর্ক, বোনের সাথে ভাই, ভাইয়ের সাথে বৌদির

হাস্নাহেনার সাথে ঘুমের ভেতরে প্রণয় হয়ে গেলে অরূন্ধতী নেমে আসে
হিমালয়ে জমছে বেদ; প্রতিটি সুক্ত মুখস্থ আমার- অগ্নির প্রতি স্বাহার আসক্তি শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে
পৃথিবী ও পরা-পৃথিবীতে এর চেয়ে বিশুদ্ধ নিষ্কাম আর নাই- বুঝেছিলেন লালন ফকির।।

পাখি তুমি মিথ্যা ডানায় ভর দিয়ে উড়েছ মিথ্যার অনন্ত আবর্তে
তুমি মিথ্যা মিছিলে গিয়ে চঞ্চু ভরে মিথ্যা শ্লোগান শিখে নিয়েছো
তোমার ঠোঁটের রঙ কি হলুদ ছিল আগে? তুমি গিয়ে চিৎ
পড়ে আছ মিডনাইট চ্যানেলে--

কারা হেঁটে যাচ্ছে? ওদের ডাকুন; সক্রিয় হোন পাঠক ও পাঠিকা বৃন্দ।। মুলোর কেজি কত আজকাল?
সিমের ফলন লাভজনক হলে ডাকিনীকে কয়েকটি চুমু ধার দেওয়া যাবে।
মানুষ জানে তার রক্তের রঙ- সাহিত্য নাকি আজকাল সকালে বিকালে ফলে নারকেল গাছে?
আমার বেড়াল কোয়েলগুলোর দিকে ভালো করে একটু তাকাতে পারে না
ওর লেজ যতটা গভীরে যায় জীবন তাতোটা নয়; অথচ তোমারা খুড়ে যাচ্ছো আর যাচ্ছেন
কী সব নাকি পেয়ে বেড়াচ্ছো। খননে শুধু গণনাই বাড়ে- মাটির পুতুল থেকে কামাখ্যার হরিণী
পেয়ে কী লাভ বলো ঝর্ণার শাদা জল ক্রমেই হচ্ছে ক্লীশে

তোমার হতের তালুর ভেতর অই তো দেখা যায় কার হৃৎপিণ্ড ধুপ ধুপ করছে!
আমি কি আমার ধমনীতে কোন উত্তরাধিকার বহন করছি বেদ রচয়িতাদের? তবে কেন স্বাতীকে এত প্রিয় লাগে
একলা একলা যখন হাঁটি-  গাছের নিচে বসি- ঘুমাই- নির্বংশ হই
তখন আবার বর্তমানে চলে আসি চমোস্কির সূত্রগুলোর মতো তুলনামূলক মেথডে

এই সেই জরায়ু, যা ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজকের এই পৃথিবী, গজানো গাছপালা আর কবিতাসমূহের বিকার
এই তো সেই রক্তপাত যার প্রবাহ থেকে ঈর্ষা ও বেদনার উৎসারণ-
আমি এই রক্তপ্রবাহের অণু পরমাণুর চরমগতির ভেতরে স্থিরতা লিখে দিলাম- কারণ
আমি বুঝতে চাই জীবন আমার বিকেলের সুপের বাটির চেয়ে খুব বেশি গভীর কিছু নয়।

প্রায় অন্ধ যুবকটি প্রতি রাতে নির্ভুল করে হাঁটতে পারে; দিনের ভিক্ষায় সে অভিজ্ঞতা কোন কাজেই লাগে না তার
সে গর্ভ ভরে জমা রাখছে খুচরো আর ছেঁড়াফেড়া জাল অনুমানগুলো; অফেরৎযোগ্য নিশানায় ভ্রাম্যমান এই স্তন
মুদি দোকানের কারবারি, স্নেহ, সোথা, লালা ভর্তি তেলের ড্রাম- এই তো সব শেষে থাকে- এই তো বেঁচে থাকে

আমার প্রতিটি চিঠি রক্তের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রাপকের ঠিকানায় নেমেছিলো পায়রার মতো
বিজয় দিবসের র‍্যালির মধ্যে বাস করে ভাবালুতাসমগ্র, কীটে খাওয়া দেশপ্রেম
থুতুর ভেতরে ঘৃণা ও ভালোবাসার বাস করে- মেন্ডেলার প্রয়ানের দিন এক কথা বুঝেছিলাম
তাই আমি বুছতে চাই লাল ও সবুজ
তাই আমি বুঝতে চাই একটি ভাষণ
তাই আমি বুঝতে চাই একটি তর্জনি-ইশারা

বন্‌ বন্‌ করে বনের ভেতরে ঘুরছে শিকারী কুকুরেরা
আমিও ফুল দিতে যাবো বিজয়স্তম্ভে

এই টায়ারের ইতিহাস বন্দি থাক চারুকলায়, আমার বন্ধু ও কমরেডরা ইম্প্রেশানিস্ট ক্যনভাসে বিড়ি খায়
রোদে শুকোতে দেয় জলরঙের আঁচড়, কিম্বা তুলির পশমি চুমু

জীবন দগদগে ঘা হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, আটাশ বছর ধরে তাকে খুঁজে যাচ্ছি

একটি কুড়ে ঘর
একটি চাকু
পে-কমিশন
ইনকামট্যাক্স ফাইল
আর একটি কালখন্ড
এই সব জমিয়ে রেখেছি

এ সব তোমার জন্য, এসে নিয়ে যেও

বি-পজেটিভ রক্তের একচেজিং এখানেই শেষ।।
ব্লাড ডোনেটিং ক্লাবে মাথা নিচু করে বসে থাকবো

জুসের প্যাকেটর হাতে ঘুম ঘুম চোখে তুমি কিশোরি নায়িকা

সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৩

কলা মন্দির

ভোরের বন্ধুরা ভেতরে এসো
মায়বন বিহারিনী হরিণীরা
গান সেরে চলে গ্যাছে গহীনে

স্বপ্নাতুর দুনিয়ার আলস্যে বসে
তুমি একা শুধু
শুনতেছ রবিনাথের গান

এখানে গুপ্তকলা মন্দিরে
বাঘের পায়ের ছাপ আছে

সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৩

ভাটিয়ালি

এসো ভাই
দু'জনে মিলে বরং
ভাটিয়ালি গাই
নশ্বর যা কিছু পুড়ে যাক

কণ্ঠ দরাজ করে
গাও দেখি তৃষ্ণাগুলো

যা কিছু দাহ্য
পুড়ুক পুড়ুক

রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৩

নিকটবর্তি বরফ যুগের আগে

দেখি নাই আরবের রোদ, ভারতের ধ্যান। দুনিয়ার আরেক দিকে জন্মাইসি
ম্যামথ দিনের কথা গল্পে শুন্‌ছি। চোখে বাধা সোনলি কাগজ
বন্ বন্ কইরা ঘুরতেছে মাটি; আমরা স্থির আছি কার্বনের যুগে।।

কে কইছে, শুরু আর শেষ? আমি ত জন্মেরই আগে দেইখা নিছি সব
আমার শুড়ের নিচে একপাটি দাঁত কেউ লুইঠা নিবো না
ডাক্তার বন্ধুর কাছে গিয়া ১৩০০০ টাকায় রুট-ক্যানেল সাইরা লইছি

এই বরফ যুগের শেষে বইসা আছি হিমকপাট লাগাইয়া;
ভারতের ধ্যান নাই, আরবের রইদ ড্রোনের ডানায় ওড়ে
জাতি ও উপজাতির খোঁজে, আমরা ভার্চুয়াল প্রিন্টারে
আঁকি রিয়ালেস্টিক ছবি, গ্লোবাল ওয়ার্মিং খুঁজি

আর চিন্তা করি।।

শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৩

অনিরপেক্ষ দর্শন

মাটির স্পর্শ লেগে ভেঙ্গেছে বিগ্রহ
অপার চাহিয়া আছি তোর নয়ানে
ত্রিনেত্রা, বিরহীরে দাও তব অনুগ্রহ
কিছু; ভাষা দাও বেহায়া জবানে।।

সত্য নির্মোহ নয়, ভ্রান্তির বিলাসে
পক্ষপাতি স্তুতিময় টীকার আকাশে
উড়ে উড়ে চিনে নাও গোপন ট্রেজার
পানের মতো দর্শনও চিবাও অপার

ওগো কবি, দর্শন হেতু বিরচিবে কি
ইশতিহার খানি? মুখে পুরে আমলকি
জলপাই তেঁতুলের ভক্তির মিথলজি
তুমিতো লবন দেশে বেশ আছ জানি

গল্পের ভিতর মাটি নাই, সরে গেছে
আমার পায়ের তলায় তুলোর হৃদয়
একদা আত্মমগ্ন পাখিদের মুক্তপুচ্ছে
এসেছিলো ইতিহাস, অতুল্য অভয়

সেই পাখিদের একে একে শিকার
করেছে যারা, রচিছ তাদের অধিকার
বারতা। উদ্‌গিরিত অন্ধকার ফেনার
তুমিও সেজেছ নেতা গোপন সুবিধার

অর্ধেক গণতন্ত্র তুমি- নিজের জন্য
অর্ধেক বিপ্লবী- খুন হলে জনারণ্য
তব পুঁথির পাতায় মানুষের ঠাঁই নাই
তবু বল, ''আমি লালনেরই গান গাই''

রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

নদী

নদীর পাড়ে শুয়ে আছি।
স্রোতের কথা শুনি নাই
নদী কয়, ক্যান আইলি
কইলাম, এমনেই

তারপর পর চইলা গেছি
জামা পইড়া ইন্টারভিউ দিসি
চাকরি হইসে
এইচআর এ

লোকের মাইনে কাটি
ধমকাধমকি করি
ইন্টারভিউ লই

নদীটারে ভুইলা গেছি
সে ভুলে নাই।

গোল্ডেন হেন্ডশেইক খাইয়া
হাঁটতেছিলাম।
রাস্তাটা জিগায়, মনে আছে?
কইলাম, না

কইলো, আমার কিনারে এক বিকালে হিসু কর্সিলা, মনে নাই?

শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৩

ধাতুযুগ

পিঠের কাছেই ছিলো ছুরিটা;
গেঁথে গেল

কারা এনে দিলো ধাতুযুগে
গ্যালভানাইজ রীতি?


রক্তমাখা হাত- সে আমারই
ক্ষতাক্ত পিঠ- সেও আমার

বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৩

নাকফুল

আমাদের বিছ্‌রি নাকফুল; পড়লেই হয়ে যায় মল্লিকারাত। বৃষ্টি শেষে
ঘাস জমে পুষ্পিত শোভনালয়ে। পৌষের সন্ধ্যা দেখা দেয়,
চলে আসে স্বপ্নব্যাধ

আমাদের নাকফুল; এক শতাব্দি আগেও অনাপত্তিকর ছিল।
তখন নেমে আসতো বাদুরের শব্দপ্রতীজ্ঞা;
মনে আছে?
ফুলের ভেতর ডোবানো শহর, সখ্যতা আর তরমুজ লাল-
ছিল ভীষণ মিলেমিশে

তোমার নাক জুড়ে ছৈয়ালের দুর্দশা। রোপিত হয়েছে হেলিপ্যাড
বিরাণ ভাল্লুক, নভোবিকার।
অহেতুক ড্রপ খাচ্ছে কোজাগরি চাঁদ, হাস্যল ঠোঁট

নাকফুল জমে শিশিরে, লাউফুলে;
পরিচিত বর্ষার সকালে
রোদমন্থন
উড়ে যাবে আকাশমন্ডলী পার হয়ে

শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৩

কার হাতে স্বপ্নের মতো বাজতেছি

বিশাল মাস্তুল- না দ্রুতগামি বাস; এড়িয়ে যাচ্ছি
নাথেরপেটুয়া। আমার হয়েছে এই বিপদ,
নিজেকে হরিণ মনে হয়। মাঠ দেখলেই দৌড়ে গিয়ে
ঘাসের কাছে আব্দার করতে চাই;

কাস্তে, না; ছুরি। নিটোল, তীক্ষ্ণ। পাঁজর ভেদ করে
অনায়াসে ফুটো করে দেবে হৃৎপিন্ড।
আমি ট্রেনের বদলে নৌকায় চড়তে ভালোবাসতাম বেশি
এখন ডেমুই একমাত্র ভরসা তোমার কাছে আসতে

তত্ত্ব থেকে ছাই ওড়ে। সেই ছাই মেখে মিছিলে নামি
তারপর মেঘের মতো ক্লান্ত হয়ে বাতাসে ঘুমিয়ে পড়ি

কোন কোন শব্দ দ্ব্যর্থ। যেমন 'তুমি' শব্দটি; এত বেশি
ব্যবহৃত আমার ও আমার গোত্রের সবার মধ্যে
অথচ এর মানে বের করতে গিয়ে অনেকেই নাকাল

মাঝে মাঝে দুই পায়ে হাঁটি; তখন মনে পড়ে যায়
আমি আসলে তৃষভোজী নই, মাংসাশী।
খুর ও খড়মের পার্থক্যের মতো জুয়ার টেবিলে থামি

নারী ও লিপ্সায় কোন ভেদ নেই, যেমন নেই তোমার
ডানের সাথে বামের- উভয়েই প্রতিক্রিয়াময়।
টেবিলের গ্লাস কখনো খালি থাকে না- মাস্তুল থেকে
কাস্তের রাজনীতি, আ জার্নি বাই বাস, খড়মের শব্দ

সবই থাকে; থাকি না শুধু তোমার স্বপ্নের থরোথর

বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৩

ক্লান্তি শেষে

মদ খাইতে খাইতে তোমার কথা ভাবি
ইস্কুলে যাইতে যাইতে সিনেমার পোস্টার দেখি
মাটির নিচের জল উইঠা আসে কেমনে- তুমি জান
তোমার কথা ভাবি তালাছাবির শব্দের ভিতর

ওগো মাস্টারনী, এইটা চাইল্ড এবিউস না, এইটারে
প্রেম কয়; তুমি লাল রঙের কামিজ পইরা কেন
আসলা? পোলাপাইনের মাথার ভিতর শুধু লেখাপড়া
থাকবো- এইটা তো কোন যুক্তির কথা না;

তুমি বিধবা রঙের শাড়ি পরলেও বোতলের ভিতর
দৈত্যের মতো গুম হৈয়া থাকবো না বাসনার ধুন
তুমি কামিজ পড়লে আমি কৈশোরেই জোয়ান
তুমি ইস্কুলে আসলে আর কেউ ছাত্র থাকে না

আকাশের দিকে তাকাইলেই রইদ আইসা পড়ে
মেঘ আর মেঘলা দিন একরকম না
আমি দাঁড়াইয়া থাকি চিটাংরোডে, লোকে ভাবে
সিভিল ড্রেসে আমি বুঝি নতুন ষড়যন্ত্র

অথচ মহিপাল আসলেই মনে পড়ে আমি হাফ টিকিট
তুমি ময়না পোষ, লেডিস সিটে গিয়া একলা বসো
দাঁড়ায়া দাঁড়ায়া ভাবি পকেটে কত কী থাকে
একটা ফুল টিকিট থাকলে বড় ভালো হইতো

বৃষ্টি নামে, বৃষ্টির ভিতর থিকা কাঁচা হলুদের রঙ
ইশারা দিয়া ডাকে; ফুলের গন্ধে নির্ঘুম বইসা
পাটীগণিত ভুইলা যাই; গত শতক
থেইকা এই শতক আসতে আসতে ভাবছিলাম
দুই শতাব্দি ধইরা একই ভবনায় বুঁদ মাইরা আছি

হাঁটতে হাঁটতে তোমার কথা ভাবি, সিনেমা হলের
অন্ধকারে হাত মুঠ হইয়া যায়-

রাস্তায় ভীড়ের মইধ্যে চিৎকার দিতে মন চায়
পার্টি অফিসে গিয়া কমরেডগো লগে বইয়া
থাকতে ইচ্ছা করে; কার্ল মার্কসের ছবির পিছনে
প্রেমপত্র গুঁজে দিতে মন চায়

শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৩

নিপাতনে সিদ্ধ

সর্বনামের মোহে পড়ে গেছি। এখন থেকে তোমার নাম তুমি।
দুই ডানায় উড়ে উড়ে বেড়াবে, তবু তোমার নাম দেবো না পাখি
কারণ বিহঙ্গ শব্দটি বিশেষ্য। উত্তপ্ত ডানায় তুমি উড়তে উড়তে
অনেক দূর চলে যাবে, সূর্যের দিকে- না সূর্যওতো বিশেষ্য;
তুমি ফিসে আসবে উত্তম পুরুষের বুকে, ফিরে আসবে হে
অনামবাচক; তোমার উদরে একদিন জন্ম নিবে মহাসর্বনাম।
প্রকৃত ও প্রত্যয়ের নিয়ম মেনে সে হবে নিপাতনে সিদ্ধ মানুষ

বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

একে ধরিয়ে দিন



নোট: গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে অদূর ভবিষ্যতে দুনিয়ার অনেক নিম্নাঞ্চল সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। অথচ এ গত তিন দিন ধরে শরীর থেকে ১০৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট থেকে একশ ছয় ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট পর্যন্ত তাপমাত্রা নির্গত করে যাচ্ছে

মিলতেছে না, কিছুই মিলতেছে না

না, মিলছে না। রবিবারে মুক্তি আসবে
আজকে ছুটি দেন ডাক্তার
আপনার শেলাইর সুতায় গ্রীষ্মের দাগ লেগে আছে
কিন্তু আমি তো চেয়েছি কার্তিক, কাশ গাছগুলো
পেরিয়ে গেলেই পাওয়া যাবে গেরস্থ চিহ্ন

কিছুই পেলাম না। কিছুই হলাম না।
শহরে শ্লোগান দিতে গিয়ে স্মৃতিটাকেই হারিয়ে বসলাম
শুধু মনে পড়ে আমি ও আমাদের পেছনে ভবিষ্যত বানীর মতো
ঘাতক আর বিশ্বাস ঘাতকেরা অট্টহাস্যে ফেটে পড়ছে
একই চুলোয় ভাত রেধে একই পাতিলে পঁচিয়ে গোপনে গোপনে
রস চেটে খাচ্ছে- আর আমি রবিবারের দেখা পেলাম না

প্রিয় ডাক্তার আমারে ছুটি দেন; এবার লেকচার খ্যান্ত দেন
বনদেবী ডাকতেছে, এখন আর হেল্পারির সময় নাই
আপনে বলছিলেন, কার্বন বেচে মেলা টাকা আনবেন
আপনি কইছিলেন, একদিন আমরাও রড়লোক হৈয়া যামু

কিছুই মিলতেছে না। কিছুই হৈতেছে না।
আপনি হাসতে হাসতে লেফটরাইট হৈয়া যাইতেছেন
আপনি খিলখিলাইতেছেন- আমার সামনে পিছনে
কোন দিকে রাস্তা নাই- শুধু নিজের দিকেরটার
দিকে আসার জন্য সব রাস্তা বন্ধ করতেছেন আর করতেছেন

বুঝতে পারছি, আমার আর দেশে ফিরা হৈবো না
কিছুই মিলতেছে না, কিছুই হৈতেছে না

সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

হাওয়া মেঘ

হাওয়া মেঘ উড়ে যায় উষ্ণ তৃণভূমি
ধবলি গোয়ালে বাধা রবিবাবু তুমি?
রোদের চকিত দেহ তরলিত গানে
মরানদী জেগে ওঠে ভাটিয়ালি টানে
মাটির সুবাসে তুমি জন্ম নিলে ভুলে
কিষানির ফসল হয়ে সে বেদনা ফলে
আমার গানের কলি ছন্দে ও রুপকে
ভনিতার অগোচরে চাইছে তোমাকে

তুমি মেঘ ঝরো দেহে চর্যা শোলক
পয়ার-ত্রিপদি যেন কুমারী অলক
অশ্বদিনে মাধুকরী আমি দ্বিজ দাস
গোপন ফসল ফলে, দেহতে নিবাস

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

পরী

তুমি যদি সাঁতার ভুলে যাও
একটি হলুদ কাক
উড়ে যাবার আগে খসে পড়বে গল্পের শুরুতে

অভিকর্ষের দিকে এলোমেলো
ছুটে যাওয়া জলের কণাগুলো মনে রাখবে
একটি পাতার নিবিড় প্রণয় ভেসে থাকবে
যদি সব জল তুলো হয়ে তোমার নাম রাখে পরী

সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

যাদের কথা বলছি

কিছুটা উদ্‌ভ্রান্ত
কিছুটা নীরব
কিছুটা তুমি

বাস থেকে নেমে দেখি
শহরের কাঠপিণ্ড
আলো ছায়ায় মুখোমুখি

কিছুটা ডান দিকে
বাড়ালেই হাত
স্পর্শ পেতে আমি


রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

শূন্যজা

কবরের গভীরে বসে ছুঁয়ে দেখি জমাট শীত
জড়িয়ে রয়েছে মমিময়; ওঁৎ পেতে আছে
ভূপৃষ্ঠ জুড়ে জেঁকে বসা রজ্জুর মিথ।

আমার ডানায় চড়ে একদিন তুমিও নামবে
জমিনের জমানায়; তাৎসমিক আভিজাত্যর
বৃষ্টির জলে খুঁজে পাবে হেরার জন্ম ইতিহাস

ভুলে যেও না আমিও ফার্সির বখাটেপনায়
জিয়ানো ছিলাম; যেন আমি শিঙ মাছ
গেরস্থের বালতির জলজ কয়েদি।

নিজের মর্ম বুঝতে ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমণে এসে দেখি
অসীমের তত্ত্বে লীন হয়ে আছি অনাদি পুরুষ
আমাতে বিহার করো, আমিই তোমার নিরঞ্জন

শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

মুখোমুখি

তিনটি বন্ধ দরজা। ওপাশে হলুদ সংসার
বালকের ক্লান্ত গোঙ্গানি- মুখোমুখি
আমি; অথবা প্রণব আচার্য্য।

মিরপুর মোড়ের হল মালিক জানেন,
গ্রামীণ চেকের ব্র্যাডিং পাশে নিয়ে
কতটুকু আর ভালোবাসা যায়-

দরজার অই পাশে আরশি নগর?
মনের মানুষের লগে মদনের রসারসি,
মিলনের দিন গুনতে গুনতে
চিনতে ভুলে গেছি ডলগুলোর ঠোঁট
ভুলে গেছি ওগুলোকে চুমু খাওয়ার ইচ্ছা
বঙ্কিম মাজা ছুঁয়ে যাওয়া অবৈধ নয়

বৈধ শুধু কুঠরি ভেঙ্গে নাভিগুলো
অবমুক্ত করা, তুরাগের জলে
তারপর নৌকার মতো ভাসিয়ে নেওয়া

তিনটি বন্ধ দরজার পড়শি তুমি; কী চাও?
আমি চাই লাল পিঁপড়ার দল খেয়ে ফেলুক
দরজার কালো; দীর্ঘ কবিতা লেখার
অভিজ্ঞতার মতো চুম্বনের কুদরতি;

যদি পারো খুলে দাও দরজায় আলো,
নাভি ও জরায়ুর হলুদ সম্পর্ক+বিরাগ
খুলে দাও হৃদয়ের জান্নাত

বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

তুমি মেঘ

তুমি জমেছো মেঘ- কবে থেকে জমতে শুরু
ঘন থেকে ঘনায়মান, গম্ভীর পতনের দিকে
সময় কেবলি নির্লিপ্ত দর্শকের মতো
বয়ে চলছে; যে মেঘে বৃষ্টি হয় তাকে
বর্ষণমেঘ বলে লোকে; আমি তোমাকে শুধু
পতন বলি। পতিত হও নিরলস,
আমার মাটির বিছানা-বালিশ ধুয়ে মুছে
যাবার আগে নিশ্চিন্তের শেষ নিদ্রা
শেষ কোলাহল শুনে দাঁড়িয়ে থাকবো
তোমার তুমুল আক্রমনে একা অপরাজেয়

তুমি বড় জোর সঙ্গহীন করে বয়ে নিয়ে যাবে
ধুলো-মাটি-সম্পর্কের স্মৃতিদাগ
আমি তবু দাঁড়িয়ে শেষতম জলে
লিখে দেবো মরুদাগ, প্রতিভার ক্রোধ

বিষাদ চোখে এসে পড়ে সূর্যাস্তের রঙে
অন্ধকরাচ্ছন্ন দুপুরে চাই আরো চাই তামস
নতজানু হয়ে অতঃপর শিড়দাঁড়া করা
পৃথিবীর বিক্ষুব্ধ প্রনয় যুগল,
মেঘমিশ্রিত দেহবাসর,
সবার আগে চাই অবাধ বিধান

তুমি কেন ভাসিয়ে দিতে পারো না
সামাজিক আগাছা-বিধান
নাকি তুমিও অঞ্জন ঝটিকা বলে
কেবলি সঙ্ঘ আর সঙ্গের তফাত ভুলে যাও

আমার পিতৃত্বের বাসনা ধুয়ে যাক শ্রাবণে
তোমার রজরক্ত রূপকথা হয়ে থাক
বসন্তনিশিথে। নামের পাশে পদবীটাই
নির্ণায়কের মূল সুত্র আজ। ওষ্ঠ অথবা হৃদয়ের
কম্পিত চাওয়া ভিন্ন চিতার ছাই হয়ে ভাসবে জলের
চতুর আদোরে। এই শেষতম চুম্বনে দীর্ঘ উপায়
আমাদের পৃথিবীতে বিশুদ্ধ বর্ষা আসেনি এখনো

পাখি ডাকে; চোখে তার চঞ্চুর নির্ভার
সেও উড়ে যাবে বৃষ্টির মাতাল প্রস্রবনে

২৯ আগস্ট, ২০১৩

শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

নক্ষত্রচুম্বন

আকাশের শিঙে নক্ষত্র এসে চুমু খেল
ধুলোরা ছুটে গেল বর্ষার দিকে-
বর্ষা, আমার আগুন ছোঁয়া বোষ্টমী
হরিবোল হরিবোল ... জিকির

তারপর একদিন সঙ্গহীন ছাঁদে
নেমে এলো পরিচয়, রূপালি চাঁদে
তাদের চিনতে গিয়ে তত্ত-তালাশ;
গাঁয়ের মেয়েরা বুড়ো হয়ে যায়
ভরা পূর্ণিমায় তোর চোখে জল
পথে নামে দেহভষ্মছাই-
চুমুর দাগ পড়ে থাকে পেছনে শুধু

মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৩

মুক্তিবেগ

আকাশে বড় চাঁদ। বুড়ির চরকায় তুলোর জট
ভেঙ্গে যাচ্ছে ক্রিস্টাল নীরবতা-
আমাদের বাতাস থেকে উড়ে চলে যাচ্ছে শিমুল ফুলের ঘ্রান
পুড়ে যাচ্ছে মাটি, দিঘি, রামপ্রসাদের ভক্তিগীতি; সব তুলো
উড়ে যাচ্ছে পৃথিবীর বাতাস ছেড়ে; ঘুমিয়ে পড়েছে স্বতন্ত্রতা
আমরা গোপনে হারিয়ে ফেলেছি অতীব পরাজয়
আকাশে চাঁদের আলো- তুমি হুহু বাতাস
আমি শালিখের রাতের ক্রন্দন- আকাশ ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে
চরকার চাকা, সাদা থান, ক্রিমির মতো কিলবিলে সব সুতোগুলো

সীসা

আমরা দু’জনে পেয়ে গেছি হরিনের খুর- মড়ক লাগা
মাছিদের শেষ গুঞ্জন; ঢাকার আকাশে
আজ অনেক ধোঁয়া, দু’জনে মিলে হয়ে আছি
পালকের নরোম শ্বাস। গাছেদের পাতা থেকে
মুছে গ্যাছে সেই কবে বসন্তের দাগ-
অজস্র বেগুনী আলো আর ট্রাফিক হলুদ রিরাংসায়
না, এটা প্রাচীন নাটকের একরৈখিক বিন্যাস নয়
এ শহরের সবকটি ইটে লেগে আছে কসমোপলিটন ধূলো
ভুলে গ্যাছো; ভুলে গ্যাছো এই শহরে ধূলো উড়িয়ে
বেজেছিলো ঘন অশ্বখুরধ্বনি- আমরা এসেছি
সেদিনই-তো- সীসার মতো ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে রোদ

শনিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৩

উচ্চারণ

আমরা পেয়ে যাবো পূর্বজদের পায়ে চলা পথ
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ- কতোবার
কতো মানুষের ভীড়ে বৃক্ষেরা জন্মেছিলো
কতো মানুষের চোখে ভরা স্বপ্নের মতো;
তুমি এক পঙক্তির সৌন্দর্য হয়ে আছো
তুমি ফের শ্লোগানের মতো ধিকি ধিকি জ্বলছো
জ্বলছো নিভছো জোনাক- আমরা হেঁটে যাবো
রিক্ত পথে বহুময় একাকীত্বে; কতোবার পেয়ে
হারিয়েছি ঐরাবতের পাল- কতোবার হয়ে গ্যাছি
সাঁতার পটু সাদা কিশোরের শার্ট; উড়তে উড়তে
হাওয়ায় লুটিয়ে পড়েছি, লুটিয়ে পড়েছি তুমি আমি
সঙ্ঘযুথের দিপ্র উচ্চারণে।