রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

নদী

নদীর পাড়ে শুয়ে আছি।
স্রোতের কথা শুনি নাই
নদী কয়, ক্যান আইলি
কইলাম, এমনেই

তারপর পর চইলা গেছি
জামা পইড়া ইন্টারভিউ দিসি
চাকরি হইসে
এইচআর এ

লোকের মাইনে কাটি
ধমকাধমকি করি
ইন্টারভিউ লই

নদীটারে ভুইলা গেছি
সে ভুলে নাই।

গোল্ডেন হেন্ডশেইক খাইয়া
হাঁটতেছিলাম।
রাস্তাটা জিগায়, মনে আছে?
কইলাম, না

কইলো, আমার কিনারে এক বিকালে হিসু কর্সিলা, মনে নাই?

শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৩

ধাতুযুগ

পিঠের কাছেই ছিলো ছুরিটা;
গেঁথে গেল

কারা এনে দিলো ধাতুযুগে
গ্যালভানাইজ রীতি?


রক্তমাখা হাত- সে আমারই
ক্ষতাক্ত পিঠ- সেও আমার

বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৩

নাকফুল

আমাদের বিছ্‌রি নাকফুল; পড়লেই হয়ে যায় মল্লিকারাত। বৃষ্টি শেষে
ঘাস জমে পুষ্পিত শোভনালয়ে। পৌষের সন্ধ্যা দেখা দেয়,
চলে আসে স্বপ্নব্যাধ

আমাদের নাকফুল; এক শতাব্দি আগেও অনাপত্তিকর ছিল।
তখন নেমে আসতো বাদুরের শব্দপ্রতীজ্ঞা;
মনে আছে?
ফুলের ভেতর ডোবানো শহর, সখ্যতা আর তরমুজ লাল-
ছিল ভীষণ মিলেমিশে

তোমার নাক জুড়ে ছৈয়ালের দুর্দশা। রোপিত হয়েছে হেলিপ্যাড
বিরাণ ভাল্লুক, নভোবিকার।
অহেতুক ড্রপ খাচ্ছে কোজাগরি চাঁদ, হাস্যল ঠোঁট

নাকফুল জমে শিশিরে, লাউফুলে;
পরিচিত বর্ষার সকালে
রোদমন্থন
উড়ে যাবে আকাশমন্ডলী পার হয়ে

শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৩

কার হাতে স্বপ্নের মতো বাজতেছি

বিশাল মাস্তুল- না দ্রুতগামি বাস; এড়িয়ে যাচ্ছি
নাথেরপেটুয়া। আমার হয়েছে এই বিপদ,
নিজেকে হরিণ মনে হয়। মাঠ দেখলেই দৌড়ে গিয়ে
ঘাসের কাছে আব্দার করতে চাই;

কাস্তে, না; ছুরি। নিটোল, তীক্ষ্ণ। পাঁজর ভেদ করে
অনায়াসে ফুটো করে দেবে হৃৎপিন্ড।
আমি ট্রেনের বদলে নৌকায় চড়তে ভালোবাসতাম বেশি
এখন ডেমুই একমাত্র ভরসা তোমার কাছে আসতে

তত্ত্ব থেকে ছাই ওড়ে। সেই ছাই মেখে মিছিলে নামি
তারপর মেঘের মতো ক্লান্ত হয়ে বাতাসে ঘুমিয়ে পড়ি

কোন কোন শব্দ দ্ব্যর্থ। যেমন 'তুমি' শব্দটি; এত বেশি
ব্যবহৃত আমার ও আমার গোত্রের সবার মধ্যে
অথচ এর মানে বের করতে গিয়ে অনেকেই নাকাল

মাঝে মাঝে দুই পায়ে হাঁটি; তখন মনে পড়ে যায়
আমি আসলে তৃষভোজী নই, মাংসাশী।
খুর ও খড়মের পার্থক্যের মতো জুয়ার টেবিলে থামি

নারী ও লিপ্সায় কোন ভেদ নেই, যেমন নেই তোমার
ডানের সাথে বামের- উভয়েই প্রতিক্রিয়াময়।
টেবিলের গ্লাস কখনো খালি থাকে না- মাস্তুল থেকে
কাস্তের রাজনীতি, আ জার্নি বাই বাস, খড়মের শব্দ

সবই থাকে; থাকি না শুধু তোমার স্বপ্নের থরোথর

বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৩

ক্লান্তি শেষে

মদ খাইতে খাইতে তোমার কথা ভাবি
ইস্কুলে যাইতে যাইতে সিনেমার পোস্টার দেখি
মাটির নিচের জল উইঠা আসে কেমনে- তুমি জান
তোমার কথা ভাবি তালাছাবির শব্দের ভিতর

ওগো মাস্টারনী, এইটা চাইল্ড এবিউস না, এইটারে
প্রেম কয়; তুমি লাল রঙের কামিজ পইরা কেন
আসলা? পোলাপাইনের মাথার ভিতর শুধু লেখাপড়া
থাকবো- এইটা তো কোন যুক্তির কথা না;

তুমি বিধবা রঙের শাড়ি পরলেও বোতলের ভিতর
দৈত্যের মতো গুম হৈয়া থাকবো না বাসনার ধুন
তুমি কামিজ পড়লে আমি কৈশোরেই জোয়ান
তুমি ইস্কুলে আসলে আর কেউ ছাত্র থাকে না

আকাশের দিকে তাকাইলেই রইদ আইসা পড়ে
মেঘ আর মেঘলা দিন একরকম না
আমি দাঁড়াইয়া থাকি চিটাংরোডে, লোকে ভাবে
সিভিল ড্রেসে আমি বুঝি নতুন ষড়যন্ত্র

অথচ মহিপাল আসলেই মনে পড়ে আমি হাফ টিকিট
তুমি ময়না পোষ, লেডিস সিটে গিয়া একলা বসো
দাঁড়ায়া দাঁড়ায়া ভাবি পকেটে কত কী থাকে
একটা ফুল টিকিট থাকলে বড় ভালো হইতো

বৃষ্টি নামে, বৃষ্টির ভিতর থিকা কাঁচা হলুদের রঙ
ইশারা দিয়া ডাকে; ফুলের গন্ধে নির্ঘুম বইসা
পাটীগণিত ভুইলা যাই; গত শতক
থেইকা এই শতক আসতে আসতে ভাবছিলাম
দুই শতাব্দি ধইরা একই ভবনায় বুঁদ মাইরা আছি

হাঁটতে হাঁটতে তোমার কথা ভাবি, সিনেমা হলের
অন্ধকারে হাত মুঠ হইয়া যায়-

রাস্তায় ভীড়ের মইধ্যে চিৎকার দিতে মন চায়
পার্টি অফিসে গিয়া কমরেডগো লগে বইয়া
থাকতে ইচ্ছা করে; কার্ল মার্কসের ছবির পিছনে
প্রেমপত্র গুঁজে দিতে মন চায়

শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৩

নিপাতনে সিদ্ধ

সর্বনামের মোহে পড়ে গেছি। এখন থেকে তোমার নাম তুমি।
দুই ডানায় উড়ে উড়ে বেড়াবে, তবু তোমার নাম দেবো না পাখি
কারণ বিহঙ্গ শব্দটি বিশেষ্য। উত্তপ্ত ডানায় তুমি উড়তে উড়তে
অনেক দূর চলে যাবে, সূর্যের দিকে- না সূর্যওতো বিশেষ্য;
তুমি ফিসে আসবে উত্তম পুরুষের বুকে, ফিরে আসবে হে
অনামবাচক; তোমার উদরে একদিন জন্ম নিবে মহাসর্বনাম।
প্রকৃত ও প্রত্যয়ের নিয়ম মেনে সে হবে নিপাতনে সিদ্ধ মানুষ