বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

একে ধরিয়ে দিন



নোট: গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে অদূর ভবিষ্যতে দুনিয়ার অনেক নিম্নাঞ্চল সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। অথচ এ গত তিন দিন ধরে শরীর থেকে ১০৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট থেকে একশ ছয় ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট পর্যন্ত তাপমাত্রা নির্গত করে যাচ্ছে

মিলতেছে না, কিছুই মিলতেছে না

না, মিলছে না। রবিবারে মুক্তি আসবে
আজকে ছুটি দেন ডাক্তার
আপনার শেলাইর সুতায় গ্রীষ্মের দাগ লেগে আছে
কিন্তু আমি তো চেয়েছি কার্তিক, কাশ গাছগুলো
পেরিয়ে গেলেই পাওয়া যাবে গেরস্থ চিহ্ন

কিছুই পেলাম না। কিছুই হলাম না।
শহরে শ্লোগান দিতে গিয়ে স্মৃতিটাকেই হারিয়ে বসলাম
শুধু মনে পড়ে আমি ও আমাদের পেছনে ভবিষ্যত বানীর মতো
ঘাতক আর বিশ্বাস ঘাতকেরা অট্টহাস্যে ফেটে পড়ছে
একই চুলোয় ভাত রেধে একই পাতিলে পঁচিয়ে গোপনে গোপনে
রস চেটে খাচ্ছে- আর আমি রবিবারের দেখা পেলাম না

প্রিয় ডাক্তার আমারে ছুটি দেন; এবার লেকচার খ্যান্ত দেন
বনদেবী ডাকতেছে, এখন আর হেল্পারির সময় নাই
আপনে বলছিলেন, কার্বন বেচে মেলা টাকা আনবেন
আপনি কইছিলেন, একদিন আমরাও রড়লোক হৈয়া যামু

কিছুই মিলতেছে না। কিছুই হৈতেছে না।
আপনি হাসতে হাসতে লেফটরাইট হৈয়া যাইতেছেন
আপনি খিলখিলাইতেছেন- আমার সামনে পিছনে
কোন দিকে রাস্তা নাই- শুধু নিজের দিকেরটার
দিকে আসার জন্য সব রাস্তা বন্ধ করতেছেন আর করতেছেন

বুঝতে পারছি, আমার আর দেশে ফিরা হৈবো না
কিছুই মিলতেছে না, কিছুই হৈতেছে না

সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

হাওয়া মেঘ

হাওয়া মেঘ উড়ে যায় উষ্ণ তৃণভূমি
ধবলি গোয়ালে বাধা রবিবাবু তুমি?
রোদের চকিত দেহ তরলিত গানে
মরানদী জেগে ওঠে ভাটিয়ালি টানে
মাটির সুবাসে তুমি জন্ম নিলে ভুলে
কিষানির ফসল হয়ে সে বেদনা ফলে
আমার গানের কলি ছন্দে ও রুপকে
ভনিতার অগোচরে চাইছে তোমাকে

তুমি মেঘ ঝরো দেহে চর্যা শোলক
পয়ার-ত্রিপদি যেন কুমারী অলক
অশ্বদিনে মাধুকরী আমি দ্বিজ দাস
গোপন ফসল ফলে, দেহতে নিবাস

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

পরী

তুমি যদি সাঁতার ভুলে যাও
একটি হলুদ কাক
উড়ে যাবার আগে খসে পড়বে গল্পের শুরুতে

অভিকর্ষের দিকে এলোমেলো
ছুটে যাওয়া জলের কণাগুলো মনে রাখবে
একটি পাতার নিবিড় প্রণয় ভেসে থাকবে
যদি সব জল তুলো হয়ে তোমার নাম রাখে পরী

সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

যাদের কথা বলছি

কিছুটা উদ্‌ভ্রান্ত
কিছুটা নীরব
কিছুটা তুমি

বাস থেকে নেমে দেখি
শহরের কাঠপিণ্ড
আলো ছায়ায় মুখোমুখি

কিছুটা ডান দিকে
বাড়ালেই হাত
স্পর্শ পেতে আমি


রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

শূন্যজা

কবরের গভীরে বসে ছুঁয়ে দেখি জমাট শীত
জড়িয়ে রয়েছে মমিময়; ওঁৎ পেতে আছে
ভূপৃষ্ঠ জুড়ে জেঁকে বসা রজ্জুর মিথ।

আমার ডানায় চড়ে একদিন তুমিও নামবে
জমিনের জমানায়; তাৎসমিক আভিজাত্যর
বৃষ্টির জলে খুঁজে পাবে হেরার জন্ম ইতিহাস

ভুলে যেও না আমিও ফার্সির বখাটেপনায়
জিয়ানো ছিলাম; যেন আমি শিঙ মাছ
গেরস্থের বালতির জলজ কয়েদি।

নিজের মর্ম বুঝতে ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমণে এসে দেখি
অসীমের তত্ত্বে লীন হয়ে আছি অনাদি পুরুষ
আমাতে বিহার করো, আমিই তোমার নিরঞ্জন

শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

মুখোমুখি

তিনটি বন্ধ দরজা। ওপাশে হলুদ সংসার
বালকের ক্লান্ত গোঙ্গানি- মুখোমুখি
আমি; অথবা প্রণব আচার্য্য।

মিরপুর মোড়ের হল মালিক জানেন,
গ্রামীণ চেকের ব্র্যাডিং পাশে নিয়ে
কতটুকু আর ভালোবাসা যায়-

দরজার অই পাশে আরশি নগর?
মনের মানুষের লগে মদনের রসারসি,
মিলনের দিন গুনতে গুনতে
চিনতে ভুলে গেছি ডলগুলোর ঠোঁট
ভুলে গেছি ওগুলোকে চুমু খাওয়ার ইচ্ছা
বঙ্কিম মাজা ছুঁয়ে যাওয়া অবৈধ নয়

বৈধ শুধু কুঠরি ভেঙ্গে নাভিগুলো
অবমুক্ত করা, তুরাগের জলে
তারপর নৌকার মতো ভাসিয়ে নেওয়া

তিনটি বন্ধ দরজার পড়শি তুমি; কী চাও?
আমি চাই লাল পিঁপড়ার দল খেয়ে ফেলুক
দরজার কালো; দীর্ঘ কবিতা লেখার
অভিজ্ঞতার মতো চুম্বনের কুদরতি;

যদি পারো খুলে দাও দরজায় আলো,
নাভি ও জরায়ুর হলুদ সম্পর্ক+বিরাগ
খুলে দাও হৃদয়ের জান্নাত

বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

তুমি মেঘ

তুমি জমেছো মেঘ- কবে থেকে জমতে শুরু
ঘন থেকে ঘনায়মান, গম্ভীর পতনের দিকে
সময় কেবলি নির্লিপ্ত দর্শকের মতো
বয়ে চলছে; যে মেঘে বৃষ্টি হয় তাকে
বর্ষণমেঘ বলে লোকে; আমি তোমাকে শুধু
পতন বলি। পতিত হও নিরলস,
আমার মাটির বিছানা-বালিশ ধুয়ে মুছে
যাবার আগে নিশ্চিন্তের শেষ নিদ্রা
শেষ কোলাহল শুনে দাঁড়িয়ে থাকবো
তোমার তুমুল আক্রমনে একা অপরাজেয়

তুমি বড় জোর সঙ্গহীন করে বয়ে নিয়ে যাবে
ধুলো-মাটি-সম্পর্কের স্মৃতিদাগ
আমি তবু দাঁড়িয়ে শেষতম জলে
লিখে দেবো মরুদাগ, প্রতিভার ক্রোধ

বিষাদ চোখে এসে পড়ে সূর্যাস্তের রঙে
অন্ধকরাচ্ছন্ন দুপুরে চাই আরো চাই তামস
নতজানু হয়ে অতঃপর শিড়দাঁড়া করা
পৃথিবীর বিক্ষুব্ধ প্রনয় যুগল,
মেঘমিশ্রিত দেহবাসর,
সবার আগে চাই অবাধ বিধান

তুমি কেন ভাসিয়ে দিতে পারো না
সামাজিক আগাছা-বিধান
নাকি তুমিও অঞ্জন ঝটিকা বলে
কেবলি সঙ্ঘ আর সঙ্গের তফাত ভুলে যাও

আমার পিতৃত্বের বাসনা ধুয়ে যাক শ্রাবণে
তোমার রজরক্ত রূপকথা হয়ে থাক
বসন্তনিশিথে। নামের পাশে পদবীটাই
নির্ণায়কের মূল সুত্র আজ। ওষ্ঠ অথবা হৃদয়ের
কম্পিত চাওয়া ভিন্ন চিতার ছাই হয়ে ভাসবে জলের
চতুর আদোরে। এই শেষতম চুম্বনে দীর্ঘ উপায়
আমাদের পৃথিবীতে বিশুদ্ধ বর্ষা আসেনি এখনো

পাখি ডাকে; চোখে তার চঞ্চুর নির্ভার
সেও উড়ে যাবে বৃষ্টির মাতাল প্রস্রবনে

২৯ আগস্ট, ২০১৩