দীপু দা’র টি স্টল সংলগ্ন চেয়ারে বসে
(আশরাফ এবং সবাক এর সাথে)
অভিযুক্ত কয়েদীর চোখ থেকে খণ্ড খণ্ড ত-এরা উড়ে গেলে যেই যেই দৃশ্যর অবতারনা হয়:
১) আশু সমাধানের আশায় সালিশি কর্মকাণ্ড শুরু হয়
২) চাঁদ থেকে চন্দ্রবিন্দু খসে গিয়ে নাসার টেলিস্কোপে ধাক্কা খায়
৩) মেয়েদের চোখে আশ্চর্যবোধক চিহ্ন পুনরায় প্রতিস্থাপিত হয়
৪) একজন বন্ধু তার শত্র“র জন্য চোখের জলে নাকের জলে একাকার হয়ে ওঠেন
৫) শাড়ির প্যাঁচের মধ্যে মহিলারা আরো বেশী ঘনায়মান হতে থাকে
৬) দর্শণের সূত্রসমূহ থেকে একে একে বেরিয়ে আসেন আমাদের প্রিয় অপ্রিয় দার্শনিকগণ
৭) নায়কের পরাজয় দৃশ্যে দর্শকেরা হাত তালি দিয়ে ওঠে
৮) কেউ কেউ চোখ মোছে
৯) যে গান গায় সে মারা যায়, যে বেঁচে থাকে সঙ্গীত তাকে ছুঁতেও পারে না
১০) শাহানার চোখের জল আশাবরিতে রূপ নেয়
#
বেডরুমে
জানালায় রোদ পুড়ে ছাই হয়-
কাঠে লেপ্টে আছে ভুল বার্নিশ
বালিকার প্রথম প্রণয় শোধ হয়
উরুসন্ধির আলতা রঙে
মাছি
ওড়ে
বালক তার নাম দেয় জ্বর
সিগনেচার
ঘুম আর ঘোরের বিপর্যয় থেকে উঠে আসো তুমি;
শব্দ করে নেমে আসে রাত-
রাতের শব্দে ধীরে ধীরে জেগে ওঠো মানবিক
পাঠকের দৈনন্দিন কলামগুলো গোস্তের গন্ধে ভরপুর
তাত্ত্বিক আলো জ্বেলে বসে আছেন প্রাজ্ঞ আমলার দল
তুমি জাগো
জাগো
এ-ফোর ভূগোলের
নাতিদীর্ঘ পথ পরিক্রমা শেষে
ধীর বিস্ময়ে
মহান মোহন চির আরাধ্য
আলোচিত সিগনেচার,
জেগে ওঠো
ধীর সংগীতে একবার;
ক্ষমা
আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না? পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেখছি
নামহীন দীঘির পাশে বসে সারা রাত নৈঃরাশ্যের নিবিড় ক্ষমা;
অথচ ক্ষমার অযোগ্য এখন এইসব পঙ্ক্তিমালা,
এই মেঘার্দ্র আকাশ, ভাঙ্গা চশমার দীর্ঘ ছায়াÑ
ক্ষমা চাই কলমের কাছে
ক্ষমা দাও দীঘিÑ
আজও তোমার নাম দিতে পারিনি এমন দুর্ভাগ্যের শহর আমার
ছোট পায়ে
ছোট ছোট পায়ে
বেড়ে উঠছেন কারা?
কাদের মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে ধীরে?
ওদের চোয়ালের হাড়ে মানচিত্র জেগে উঠছেন। দেখছি।।
সেই মানচিত্রের অক্ষ-দ্রাঘিমা ধরে অভেদ মানুষের স্রোত
সেই মানচিত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে নাতিশীতোষ্ণ প্রতীজ্ঞার দিন
মুঠো ভর্তি মাটি, মুঠো ভর্তি ওদের দিনের সূর্য।। আমি চাই
ক্ষমা মানচিত্রের কাছে।। ক্ষমা দাও মানচিত্র কিম্বা মিছিল।।
নায়িকার মতো হেঁটে আসছো
গল্পের মতো গভীর নিঃশ্বাসে
এখন গল্পের দিন---
আমার রক্তবিন্দুতে তোমার অভাববোধ হয়ে আস। এ গল্পে।।
শেষ গল্পের প্লটগুলো ভুলে যাও; ক্ষমা দাও গল্প।।
ক্ষুধা আর ক্ষুধাহীনতা কতদূর
এক দীঘি জল কতদূর নাম একটি কিংবদন্তি দরকার
নামহীন দীঘি কিংবদন্তির অভাবে
একটি কিংবদন্তি কতদূর কবে হবে?
একটি রাতের ক্ষুধা একটি রাতের ক্ষমা
আমি দেখছি সবুজ পায়রা উড়ে আসছে টলোমল জলে মিশে যেতে
নামের অভাব থাকবে না; দৃশ্যের অন্তরালে ছায়া নেমে আসে
তুমি
উন্মোচিত হও- তুমিতো ধোঁয়াশা নও তাঁর মতো;
কল্পণার উঠোন তোমাকে হতে হবে না।
যতই দুর্বোধ্য হও- তুমি সত্য; আগুনের উষ্ণতার মতো
শেষ রাতের ক্লান্ত চুম্বনের মতো
ঘামের মতোন- যতোই চোখ তুলে দেখি
ততোই তুমি
তুমি হয়ে যাও-
বিস্ময়ের চাদোর জড়িয়ে অতিক্রম করে চলছো মাঘের শীত। তুমি গ্রন্থজাত নও- বিবিধ অক্ষর থেকে বহুদূরে সরল আদিকোষ তুমি- তোমাকে আনন্দ দিতে আমিই ঈশ্বর হয়ে যাই- হেমন্তের ঈশ্বর- মেরু দেশের তুষারপাতের বিভ্রম ডিঙ্গিয়ে
আমরা পরস্পর কথা বললেই বৃষ্টি নেমে আসে কোথাও কোথাও
হাজার হাজার উপমা ধেয়ে আসে আমাদের পারস্পরিক একীভবনে
তুমি উন্মোচিত হলেই উত্থিত হয় আমার জ্ঞান
গতকাল খুঁড়ে তুলে নিয়ে আসি পিতৃপুরুষের ঋণ
মাতাল করোটি- অতীত মেঘ-;
তুমি স্থির হলে থেমে যায় আমার বিকাশ
ধোঁয়ায় ঢেকে গেলে থেমে যাবে
সব নির্মাণ।।
তুমি, আলোকিত হও
যাবতীয় বিভ্রম থেকে মুখ তুলে
ব্যাধি
তোমার করে আঙুলে বসতি স্থাপনে উদ্যোগী হ’তেই
দ্বিজন্ম অভিসারে মুখ ফুলিয়ে কাঁদ; এবং
অভিসম্পাতে ভরিয়ে তোলো পারফিউম ভ্যালি
চোখের রঙ --
কয়েক টুকরো গত দিন, রুটিরুজি
টিফিনবক্স, স্মৃতি-বাকসো আমার অপেক্ষায় রেখে
আমার অপেক্ষায় বিদেশী কায়দায় গোসল করো
আতর মাখো উপমাদ্বয়ে, কাঁধে
বিরহের অতুল আস্বাদে ভেজ অবিরাম;
চুল শুকোতে দাও অতঃপর-
হাতে পেতে দ্বিপ্রহরের নিটোল রোদ ছুঁয়ে দিলে
ভয় নামক ব্যাধি পেয়ে বসে চোখে
বেহালার বাদকেরা এখনো প্রস্তুতি নিচ্ছেন শহরের কোনায় কোনায়;
অথচ জানিই না একদা আমি জন্মেছিলাম
অথচ আমি জানিই না গর্ভপাত আইন
সমবন্টন নীতি মানে কি না;
অথচ আমি শপথ করেছিলাম শপথ ভাঙবোই ভাঙবো
বরঙ তোমার চুল থেকে বাষ্পের মতো উড়ে যাচ্ছে
একদা লিখিত আমার থরোথরো পঙ্ক্তিমালা
হায়, হৃদয় চুরমার করে এখন আর বৃষ্টি নামে না
যেহেতু আমি জেনে গেছি নৈর্ব্যক্তিকতার দিন শেষ
গুহাবাসীনি
আমাদের ঘুম কেটে গেলে রোদ নেমে আসে অজন্তায়
গুহাবাসীনি, ভোর হও এবার- দোরে দোরে মাধুকরী
শীত আসলেই উঁকি দিতে পারবে
এখন আমি মিছিল থেকে নেমে আসি
- দাঁড়াও, দাঁড়াও
কয়েক বছর ধরে বাথটাব থেকে চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ছে রঙিন পানি
আলাদা হয়ে থাকা পারফিউম থেকে ভেসে আসছে বিষাক্ত সংলাপ
সোমা অসম্ভব ভালো লোক ছিলো
অথচ মেয়েটা কেমন মুটিয়ে গ্যালো, দ্যাখ;
এই যে ঘুম কেটে যায় বারবার
কি যে করি,ক্বী করি
গুহাচিত্রের মানুষেরা, ওকে তোমরা শোনাও প্রতœইতিহাস
ওর ফসিল শীঘ্রই পেয়ে যাবো- বাম হাতে দিয়ে রাখ ছুরি
ডান হাতে একখণ্ড মুর্খ অভিযোগ হলে আরো ভালো হয়;
আর্কিওলজির ছেলেদেরওতো বিনোদন দরকার- না কি।।
সোমা মেয়েটাকে নিয়ে স্বপ্ন ছিলো
সোমা মেয়েটা মিছিলে ছিলো
সোমা মেয়েটা শেষমেশ মিছিলই হয়ে গ্যালো
দাঁড়াতে বলেছিলাম, শুনলো না গন্ধক-রমনী।।
শীতের সকালে হাড়ি হাড়ি পারফিউম আসে আমাকে উদ্দেশ্য করে
প্রতেœর উনুনে দিনভর জাল দেই শ্লোগান, বিবিধ সংলাপ
উত্তাপে ঘন হয়, ক্রমেই ঘন হতে থাকে আমাদের ঘুম
সোমার বাথটাবে আদিপুরুষেরা পুনরায় গুহাচিত্র আঁকতে থাকেন
পুর্ণোদ্যমে।।
নির্ভয়
(রাতিফকে)
একটি ছোট পাখি-
মুখোমুখি;
বিস্ময়
বিনয়ের ওড়াওড়ি দেখেনি-
সব ডালে
সমস্ত ডালে একদিন রব উঠবে
ওড়ো, যতো ইচ্ছে ...
কয়েক টুকরো রোদ থাকবে না
এক ও অখণ্ড আকাশে সবাই একদিন উড়বে
অবিরাম রৌদ্রে, বহু মেঘে আর
বৃষ্টিতে।।
একটি পাখি
ছোট পাখি
সব পাখি একসাথে
বেড়ে উঠবে নির্ভয়ে
কার্ডিগান হারিয়ে গেলে
কার্ডিগান হারিয়ে গেলে ইচ্ছেরা অমিতব্যয়ী হয়ে ওঠে।
আমাদের দিকে ছুটে আসে তীব্র ভয়,
করোটিতে জমানো রৌদ্র।
কয়েকটি অতিকায় হাতির নাসিকা রন্ধ্রে
খুঁজে পাওয়া যায় অবলুপ্ত সকাল;
শুকনো পাতায় জমানো আগুন আর
গেল শীতের উষ্ণতা এখনো বকেয়া রাখা
বক্তৃতাপ্রবণ সভাসদগণ।
রিক্সার হুড থেকে কার্ডিগান কার্ডিগান বলে
মৃদু স্বরে কে যেন কাকে ডাকে;
কার্ডিগান মানে মাঘের মধ্যরাতে
ফুটপাতে উদোম শিশুর বয়স্ক হামাগুড়ি।
অথবা, নিকট ইতিহাস থেকে
একে একে ফিরে আসা প্রাসাদ বালিকারা,
যারা গান গায়, নাচে আর কেঁদে বুক ভাসায়;
তাদের দেহে কোনদিন শীত নামে না।
ঐদিকে,
ঝোপের কাছে কার্ডিগান হারিয়ে যাওয়া পুরুষেরা জেনে যায়
সমস্ত রাত-মানবীর নিকনেম রেড কার্ডিগান।
মিছিলে কাছাকাছি থেকো
চুম্বনে বিশ্বাস নেই, সশব্দে হাসো
হাসিতেই রাগমোচন হয়-
মিছিলে কাছাকাছি থেকো
মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে যৌনতার অধিকার
ভাতের ভোটের বিশ্বাসের অধিকার-
অবিশ্বাসের অধিকার চাই;
চার চারটি দশক ধরে বিশ্বাস করে
স্নেহ দিয়ে মরেছি অন্যের সন্তান
মিছিলে হারিয়ে যেওনা, নিকটবর্তী থেকো
শ্লোগানেও রাগমোচন হয়
(আশরাফ এবং সবাক এর সাথে)
আমাদের চোখ জুড়ে স্বপ্ন ঠেঁসে দেওয়া হয়নি। স্বপ্ন নামক শব্দটি আমরা নিজেরাই চিনে নিতে হয়েছে- বুঝে নিতেও। বড়বেশী অদ্ভুত ভাবে উল্লিখিত শব্দটি আমরা আবিষ্কার করি বালিকা ইস্কুল মোড়ের একটি বিলবোর্ড দেখে- একটি সোনালী হাত কাঁপছিল; আর আমরা দুইটি লিপষ্টিকস্নাত ঠোঁট লক্ষ্য করে এগুচ্ছিলাম। আমাদের পূর্বজরা যে এ রকম দৃশ্য দেখেননি, এমন নয়, বরঙ অনেক লিপষ্টিককাতর ঠোঁট তারাও নির্বিচারে রক্তাক্ত করে উত্তেজিত হয়েছিলেন। এবং লিপষ্টিকের কৃত্রিমতায় বিরক্ত হয়ে বিধান দিয়েছিলেন- স্বপ্ন বলে আসলে কিছু নেই; স্বপ্ন শয়তানের প্রলোভন মাত্র। আমরা মানতে পারিনি। ফলশ্র“তিতে অভিযুক্ত হতে হলো বিধিবদ্ধ নিয়ম ভঙ্গের গুরুতর অপরাধে।
#অভিযুক্ত কয়েদীর চোখ থেকে খণ্ড খণ্ড ত-এরা উড়ে গেলে যেই যেই দৃশ্যর অবতারনা হয়:
১) আশু সমাধানের আশায় সালিশি কর্মকাণ্ড শুরু হয়
২) চাঁদ থেকে চন্দ্রবিন্দু খসে গিয়ে নাসার টেলিস্কোপে ধাক্কা খায়
৩) মেয়েদের চোখে আশ্চর্যবোধক চিহ্ন পুনরায় প্রতিস্থাপিত হয়
৪) একজন বন্ধু তার শত্র“র জন্য চোখের জলে নাকের জলে একাকার হয়ে ওঠেন
৫) শাড়ির প্যাঁচের মধ্যে মহিলারা আরো বেশী ঘনায়মান হতে থাকে
৬) দর্শণের সূত্রসমূহ থেকে একে একে বেরিয়ে আসেন আমাদের প্রিয় অপ্রিয় দার্শনিকগণ
৭) নায়কের পরাজয় দৃশ্যে দর্শকেরা হাত তালি দিয়ে ওঠে
৮) কেউ কেউ চোখ মোছে
৯) যে গান গায় সে মারা যায়, যে বেঁচে থাকে সঙ্গীত তাকে ছুঁতেও পারে না
১০) শাহানার চোখের জল আশাবরিতে রূপ নেয়
#
আর এদিকে আমি ভালোবাসা পেতে পেতে বিরক্ত হয়ে উঠি। এক বৃষ্টিতাড়িত সন্ধ্যায় দীপু দা’র টি স্টল সংলগ্ন চেয়ারে বসে তিনটি ভেজা পাথর, কিম্বা স্বপ্ন অথবা নির্জলা মিথ্যা সিগারেটে অগ্নিসংযোগ করতে করতে অনন্ত নাস্তিতে ভরে ওঠে। সেখানে এক গাঢ় দৃশ্য থেকে জন্ম নিতে থাকে অস্তিত্বহীন মেঘ। পৃথিবীর আয়ানোষ্ফিয়র থেকে যারা দেখে গলির অন্ধকারে শিউলি ফুলের ক্রমাগত নিঃষ্পেশন, গাভীর পা বেয়ে বাঁটের দিকে ধাবমান দুধরাজের ক্ষিপ্রতা, মহিলা হোষ্টেলের পাশ দিয়ে রাতভর বনরাজের নৈঃশব্দ্য পায়চারী, তারা আসলে কিছু নয়; আমাদেরই সংলগ্ন জীবন থেকে বিতাড়িত কিছু মেঘস্বর। পাথরের অথবা স্বপ্নের শরীর থেকে শববাহী মানুষের গন্ধ নিয়ে জন্ম নেয় এই মেঘঘন কথারাশি। যার নাম কবিতা হলে কোন ক্ষতি ছিল না।
বেডরুমে
জানালায় রোদ পুড়ে ছাই হয়-
কাঠে লেপ্টে আছে ভুল বার্নিশ
বালিকার প্রথম প্রণয় শোধ হয়
উরুসন্ধির আলতা রঙে
মাছি
ওড়ে
বালক তার নাম দেয় জ্বর
সিগনেচার
ঘুম আর ঘোরের বিপর্যয় থেকে উঠে আসো তুমি;
শব্দ করে নেমে আসে রাত-
রাতের শব্দে ধীরে ধীরে জেগে ওঠো মানবিক
পাঠকের দৈনন্দিন কলামগুলো গোস্তের গন্ধে ভরপুর
তাত্ত্বিক আলো জ্বেলে বসে আছেন প্রাজ্ঞ আমলার দল
তুমি জাগো
জাগো
এ-ফোর ভূগোলের
নাতিদীর্ঘ পথ পরিক্রমা শেষে
ধীর বিস্ময়ে
মহান মোহন চির আরাধ্য
আলোচিত সিগনেচার,
জেগে ওঠো
ধীর সংগীতে একবার;
ক্ষমা
আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না? পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেখছি
নামহীন দীঘির পাশে বসে সারা রাত নৈঃরাশ্যের নিবিড় ক্ষমা;
অথচ ক্ষমার অযোগ্য এখন এইসব পঙ্ক্তিমালা,
এই মেঘার্দ্র আকাশ, ভাঙ্গা চশমার দীর্ঘ ছায়াÑ
ক্ষমা চাই কলমের কাছে
ক্ষমা দাও দীঘিÑ
আজও তোমার নাম দিতে পারিনি এমন দুর্ভাগ্যের শহর আমার
ছোট পায়ে
ছোট ছোট পায়ে
বেড়ে উঠছেন কারা?
কাদের মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে ধীরে?
ওদের চোয়ালের হাড়ে মানচিত্র জেগে উঠছেন। দেখছি।।
সেই মানচিত্রের অক্ষ-দ্রাঘিমা ধরে অভেদ মানুষের স্রোত
সেই মানচিত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে নাতিশীতোষ্ণ প্রতীজ্ঞার দিন
মুঠো ভর্তি মাটি, মুঠো ভর্তি ওদের দিনের সূর্য।। আমি চাই
ক্ষমা মানচিত্রের কাছে।। ক্ষমা দাও মানচিত্র কিম্বা মিছিল।।
নায়িকার মতো হেঁটে আসছো
গল্পের মতো গভীর নিঃশ্বাসে
এখন গল্পের দিন---
আমার রক্তবিন্দুতে তোমার অভাববোধ হয়ে আস। এ গল্পে।।
শেষ গল্পের প্লটগুলো ভুলে যাও; ক্ষমা দাও গল্প।।
ক্ষুধা আর ক্ষুধাহীনতা কতদূর
এক দীঘি জল কতদূর নাম একটি কিংবদন্তি দরকার
নামহীন দীঘি কিংবদন্তির অভাবে
একটি কিংবদন্তি কতদূর কবে হবে?
একটি রাতের ক্ষুধা একটি রাতের ক্ষমা
আমি দেখছি সবুজ পায়রা উড়ে আসছে টলোমল জলে মিশে যেতে
নামের অভাব থাকবে না; দৃশ্যের অন্তরালে ছায়া নেমে আসে
তুমি
উন্মোচিত হও- তুমিতো ধোঁয়াশা নও তাঁর মতো;
কল্পণার উঠোন তোমাকে হতে হবে না।
যতই দুর্বোধ্য হও- তুমি সত্য; আগুনের উষ্ণতার মতো
শেষ রাতের ক্লান্ত চুম্বনের মতো
ঘামের মতোন- যতোই চোখ তুলে দেখি
ততোই তুমি
তুমি হয়ে যাও-
বিস্ময়ের চাদোর জড়িয়ে অতিক্রম করে চলছো মাঘের শীত। তুমি গ্রন্থজাত নও- বিবিধ অক্ষর থেকে বহুদূরে সরল আদিকোষ তুমি- তোমাকে আনন্দ দিতে আমিই ঈশ্বর হয়ে যাই- হেমন্তের ঈশ্বর- মেরু দেশের তুষারপাতের বিভ্রম ডিঙ্গিয়ে
আমরা পরস্পর কথা বললেই বৃষ্টি নেমে আসে কোথাও কোথাও
হাজার হাজার উপমা ধেয়ে আসে আমাদের পারস্পরিক একীভবনে
তুমি উন্মোচিত হলেই উত্থিত হয় আমার জ্ঞান
গতকাল খুঁড়ে তুলে নিয়ে আসি পিতৃপুরুষের ঋণ
মাতাল করোটি- অতীত মেঘ-;
তুমি স্থির হলে থেমে যায় আমার বিকাশ
ধোঁয়ায় ঢেকে গেলে থেমে যাবে
সব নির্মাণ।।
তুমি, আলোকিত হও
যাবতীয় বিভ্রম থেকে মুখ তুলে
ব্যাধি
তোমার করে আঙুলে বসতি স্থাপনে উদ্যোগী হ’তেই
দ্বিজন্ম অভিসারে মুখ ফুলিয়ে কাঁদ; এবং
অভিসম্পাতে ভরিয়ে তোলো পারফিউম ভ্যালি
চোখের রঙ --
কয়েক টুকরো গত দিন, রুটিরুজি
টিফিনবক্স, স্মৃতি-বাকসো আমার অপেক্ষায় রেখে
আমার অপেক্ষায় বিদেশী কায়দায় গোসল করো
আতর মাখো উপমাদ্বয়ে, কাঁধে
বিরহের অতুল আস্বাদে ভেজ অবিরাম;
চুল শুকোতে দাও অতঃপর-
হাতে পেতে দ্বিপ্রহরের নিটোল রোদ ছুঁয়ে দিলে
ভয় নামক ব্যাধি পেয়ে বসে চোখে
বেহালার বাদকেরা এখনো প্রস্তুতি নিচ্ছেন শহরের কোনায় কোনায়;
অথচ জানিই না একদা আমি জন্মেছিলাম
অথচ আমি জানিই না গর্ভপাত আইন
সমবন্টন নীতি মানে কি না;
অথচ আমি শপথ করেছিলাম শপথ ভাঙবোই ভাঙবো
বরঙ তোমার চুল থেকে বাষ্পের মতো উড়ে যাচ্ছে
একদা লিখিত আমার থরোথরো পঙ্ক্তিমালা
হায়, হৃদয় চুরমার করে এখন আর বৃষ্টি নামে না
যেহেতু আমি জেনে গেছি নৈর্ব্যক্তিকতার দিন শেষ
গুহাবাসীনি
আমাদের ঘুম কেটে গেলে রোদ নেমে আসে অজন্তায়
গুহাবাসীনি, ভোর হও এবার- দোরে দোরে মাধুকরী
শীত আসলেই উঁকি দিতে পারবে
এখন আমি মিছিল থেকে নেমে আসি
- দাঁড়াও, দাঁড়াও
কয়েক বছর ধরে বাথটাব থেকে চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ছে রঙিন পানি
আলাদা হয়ে থাকা পারফিউম থেকে ভেসে আসছে বিষাক্ত সংলাপ
সোমা অসম্ভব ভালো লোক ছিলো
অথচ মেয়েটা কেমন মুটিয়ে গ্যালো, দ্যাখ;
এই যে ঘুম কেটে যায় বারবার
কি যে করি,ক্বী করি
গুহাচিত্রের মানুষেরা, ওকে তোমরা শোনাও প্রতœইতিহাস
ওর ফসিল শীঘ্রই পেয়ে যাবো- বাম হাতে দিয়ে রাখ ছুরি
ডান হাতে একখণ্ড মুর্খ অভিযোগ হলে আরো ভালো হয়;
আর্কিওলজির ছেলেদেরওতো বিনোদন দরকার- না কি।।
সোমা মেয়েটাকে নিয়ে স্বপ্ন ছিলো
সোমা মেয়েটা মিছিলে ছিলো
সোমা মেয়েটা শেষমেশ মিছিলই হয়ে গ্যালো
দাঁড়াতে বলেছিলাম, শুনলো না গন্ধক-রমনী।।
শীতের সকালে হাড়ি হাড়ি পারফিউম আসে আমাকে উদ্দেশ্য করে
প্রতেœর উনুনে দিনভর জাল দেই শ্লোগান, বিবিধ সংলাপ
উত্তাপে ঘন হয়, ক্রমেই ঘন হতে থাকে আমাদের ঘুম
সোমার বাথটাবে আদিপুরুষেরা পুনরায় গুহাচিত্র আঁকতে থাকেন
পুর্ণোদ্যমে।।
নির্ভয়
(রাতিফকে)
একটি ছোট পাখি-
মুখোমুখি;
বিস্ময়
বিনয়ের ওড়াওড়ি দেখেনি-
সব ডালে
সমস্ত ডালে একদিন রব উঠবে
ওড়ো, যতো ইচ্ছে ...
কয়েক টুকরো রোদ থাকবে না
এক ও অখণ্ড আকাশে সবাই একদিন উড়বে
অবিরাম রৌদ্রে, বহু মেঘে আর
বৃষ্টিতে।।
একটি পাখি
ছোট পাখি
সব পাখি একসাথে
বেড়ে উঠবে নির্ভয়ে
কার্ডিগান হারিয়ে গেলে
কার্ডিগান হারিয়ে গেলে ইচ্ছেরা অমিতব্যয়ী হয়ে ওঠে।
আমাদের দিকে ছুটে আসে তীব্র ভয়,
করোটিতে জমানো রৌদ্র।
কয়েকটি অতিকায় হাতির নাসিকা রন্ধ্রে
খুঁজে পাওয়া যায় অবলুপ্ত সকাল;
শুকনো পাতায় জমানো আগুন আর
গেল শীতের উষ্ণতা এখনো বকেয়া রাখা
বক্তৃতাপ্রবণ সভাসদগণ।
রিক্সার হুড থেকে কার্ডিগান কার্ডিগান বলে
মৃদু স্বরে কে যেন কাকে ডাকে;
কার্ডিগান মানে মাঘের মধ্যরাতে
ফুটপাতে উদোম শিশুর বয়স্ক হামাগুড়ি।
অথবা, নিকট ইতিহাস থেকে
একে একে ফিরে আসা প্রাসাদ বালিকারা,
যারা গান গায়, নাচে আর কেঁদে বুক ভাসায়;
তাদের দেহে কোনদিন শীত নামে না।
ঐদিকে,
ঝোপের কাছে কার্ডিগান হারিয়ে যাওয়া পুরুষেরা জেনে যায়
সমস্ত রাত-মানবীর নিকনেম রেড কার্ডিগান।
মিছিলে কাছাকাছি থেকো
চুম্বনে বিশ্বাস নেই, সশব্দে হাসো
হাসিতেই রাগমোচন হয়-
মিছিলে কাছাকাছি থেকো
মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে যৌনতার অধিকার
ভাতের ভোটের বিশ্বাসের অধিকার-
অবিশ্বাসের অধিকার চাই;
চার চারটি দশক ধরে বিশ্বাস করে
স্নেহ দিয়ে মরেছি অন্যের সন্তান
মিছিলে হারিয়ে যেওনা, নিকটবর্তী থেকো
শ্লোগানেও রাগমোচন হয়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন