শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩

বরফহৃদয়

পাথরের বুকে লেখা তার পাথর নাম

চলে ইতিহাসের পথে ইতিহাস হয়ে

নম্র সকাল নামে রুপালি সিঁথির ঘামে

ঋতুর বুকে জমা রেখে পৃথিবীর সব ব্যথা

অকূলে কূল খোঁজ নিদ্রামগ্ন আষাঢ়


আকাশে নমিত মেঘমালা, উদার মাটি

কাদের নাম হয়ে মিশেছে মানবজমিনে

নম্র হও, মুগ্ধ হও—রক্তে মিশে থাকো 

দিবসেরে ভালোবাসো রাতের মতোন

অনেক দূরের পথ—বাসনার মতো

পাড়ি দিতে হবে একা একা, মনে রেখো


প্রাচীন গান ভাসে শোন, প্রাচীর দুপুরে

প্রাচীন কিশোরী ও হাঁস আলতা পায়ে

অলস আলোয়, সূর্যময় বিষাদে কখন

ফিরে পাবে উত্তরের গান, মুগ্ধসংগীত


একদিন বেদনা নিয়ে চলে যাবো দূরে

নিবিড় শীতের কোলে, স্নেহ হয়ে—

পৃথিবীর ঘূর্ণন তুমি পেয়ারার মতোন

কুক্ষিগত করে বেঁচে থেকো চিরকাল

আমাদের ছদ্মগান, হাসি, রাত্রির যাতনা

আমার সঙ্গে মুছে যাবে তমাল-তিমিরে


সবার অলক্ষ্যে পাখি পলাশীর মাঠে

গান গায় নতুন প্রভাতের—

দুঃখ দিতে এলে দুঃখ নিয়ে ফিরে যাবে

প্রেমপূর্ণ প্রাণে ইতিহাসের সব পাঠ

বৃথা হয়, উপকথা প্রাণে জাগে বিধুর

যারা চলে গেছে মাঠে প্রান্তরে, অদূরে

হয়তো ফিরবে তারা সময়ের সোনালি

বেড়াল হাতে; আর যারা দূরে আমার

ইচ্ছার যানে ছায়াপথ ধরে চলে যায়

সঙ্গে তাদের মাছের জীবন, বৃক্ষ ও

অপরাপর বোধ চলে যায় চিরতরে


আমারও ঘুমের ভেতর পাখি ডাকে

কানকোতে শিষ দেন বুদ্ধ স্বয়ং

এ যে আফগান সুর চির অজেয়

ভারতের সমস্ত দেবতার জন্মভূমি

গান্ধারে গান্ধারে কার বোধিচিত্তে

জন্মেছিলে তুমি? তোমার জন্মক্ষণ,

রক্তস্রাব পৃথিবীর পরিখা হয়ে আজও

স্রোতস্বীনি; আজও উত্তাল বারুদ


আজও দুঃখ তুমি জনক-জননীর

আজও ক্লান্তি তুমি প্রেমিক ও পুরুষের

আমি চলে যাবো, লেপের লাল ওমে,

বরফের বুকে তুমি রেখো না বরফহৃদয়।